মানসিক অস্থিরতার কারণ সমূহ ও তা থেকে মুক্তির উপায়

মানব জীবনের দুশ্চিন্তায় আসা খুবই স্বাভাবিক এটি মানুষের জীবনের সাথে ওতপ্রুত ভাবে জড়িত। এতে হতাশ হলে চলবে না । এমন মানুষ পাওয়া কঠিন যার কোন মানসিক অস্থিরতা বা দুশ্চিন্তা নেই । সুখ-দুঃখ মিলেই আমাদের জীবন। 

জীবনে চলার পথে মানসিক টেনশন অস্থিরতা এগুলো থাকবেই। এতে হতাশ হওয়া যাবেনা বরং আল্লাহর উপর ভরসা রেখে প্রতিটি পরিস্থিতিকে জয় করতে হবে। 

পেজ সমূহ : মানসিক অস্থিরতার কারণ ও মুক্তির উপায়

মানসিক অস্থিরতা কি?

মানসিক অস্থিরতা যা মানুষের প্রতিক্রিয়া হিসেবে  প্রকাশ করে ।যা পরিস্থিতির তুলনায় অতিরিক্ত বলে মনে হতে পারে। অস্থিরতা বলতে বোঝায় শারীরিকভাবে মানসিক উত্তেজনা । যার  স্বাভাবিক অবস্থায় স্থির থাকতে না পারা। 

আপনার মনের ইচ্ছার বাইরে খারাপ কোন কিছু ঘটলে বা ঘটতে থাকলে মূলত আমরা মানসিক অস্থিরতাতেই ভুগি। যে কেউ হস্থিরতায় ভুগতে পারে । তাই সঠিক কৌশলে মানসিক অস্থিরতা কাটিয়ে উঠতে পারলে জীবনের সফল সুন্দর হয়। 

মানসিক অস্থিরতার কারণ

মানসিক অস্থিরতা বলতে বোঝায় ভারসাম্যপূর্ণ উপায়ে আবেগ প্রকাশের অসুবিধা। এটি তীব্র মানসিক প্রতিক্রিয়া হতে পারে । যদিও সঠিক কারণগুলো ব্যক্তির থেকে ব্যক্তির পরিবর্তন হতে পারে এবং  পরিবেশ গত চাপের কারণে মানসিক অস্থিরতার অবদান রাখতে পারে 

কিন্তু জেনেটিক প্রারম্ভিক জীবনের অভিজ্ঞতার  এবং পরিবেশগত চাপের মতো কারণগুলো মানসিক অস্থিরতার অবদান রাখতে পারে । জেনেটিক প্রবণতা গুলি  ব্যক্তির আবেগ গুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার ভূমিকা পালন করে,কিন্তু মানসিক অস্থিরতার জন্য বেশি সংবেদনশীল করে তোলে। 

  • জেনেটিক এবং পারিবারিক ইতিহাস মানসিক অস্থিরতা বিকাশের ভূমিকা পালন করতে পারে। 
  • দীর্ঘস্থায় চাপ কাজ সম্পর্ক বা অন্যান্য উৎস থেকে হোক না কেন আবেগ নিয়ে যেন অসুবিধা রাখতে পারে। 
  • শৈশব ট্রমা শৈশবে অপব্যবহার বা অবহেলার প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মানসিক অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে। 

মানসিক অস্থিরতার লক্ষণসমূহ

যখন কেউ মানসিক অস্থিরতা অনুভব করে, তখন তারা তাদের অনুভূতিগুলোকে পরিচালনা করতে সংগ্রাম করতে পারে। মানসিক অস্থিরতার লক্ষণগুলোর মধ্যে হঠাৎ রাগ বা কান্না অনুভূতি হওয়া। এসব ব্যক্তিদের একবার মন খারাপ হয়ে গেলে শান্ত হতে সমস্যা হতে পারে এবং তারা মানসিকভাবে ক্লান্ত বোধ করতে পারে। যেমন

  • তীব্র মেজাজ এর পরিবর্তন, মানসিক অস্থিরতা নির্দেশ করতে পারে এবং দৈনন্দিন কাজকর্ম ব্যাঘাত করতে পারে। 
  • রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা,  এটি মানসিক অস্থিরতার একটি সাধারণ লক্ষণ। 
  • আবেগ আচ্ছন্ন বোধ , যেমন বিষন্নতা ,হতাশা  এগুলো কাজকর্ম ভালো ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয় না। 
  • আবেগ প্রবল আচরণ, যেমন অতিরিক্ত খরচ করা, বেপরোয়া চলাফেরা ,মানসিক   উগ্র মেজাজ দেখানো,  মানসিক অস্থিরতা কে চ্যালেঞ্জের হিসেবে দেখা দিতে পারে।

মানসিক অস্থিরতা থেকে মুক্তির উপায়  

যখন মানসিক অস্থিরতায় ভোট দিন তখন সব রকম খারাপ বা মন্দ চিন্তা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন। চেষ্টা করুন ভালো কিছু চিন্তা করার । এমন কিছু ভাবুন যে আপনার মানসিক শান্তি প্রদান করতে সাহায্য করবে। দেখবেন মানসিক অস্থিরতা এক নিমিষেই শেষ হয়ে গিয়েছে। 
আরো পড়ুন
মানসিক অস্থিরতা বোধ করার সাথে সাথে আপনার জন্য প্রথম করণীয় কাজ হবে চট করে বাইরে চলে যান। একা একা যদি ঘরের এক কোণের চুক্তি করে বসে থাকেন বা নিজেকে বদ্ধ ঘরে আটকে ফেলেন তাহলে আপনার মানসিক দুশ্চিন্তা বাড়বে ।তাই মন কেমন করলে বা বুক ধরফর করলেই একবার বাইরে গিয়ে ঘুরে আসুন । আপনার মনের অস্থিরতা অনেকটাই কমে যাবে। 

শরীর চর্চা করতে হবে

স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য প্রতিনিয়ত  শরীর চর্চা করতে হবে । আমরা যদি মানসিক এবং শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে চাই । তাহলে অবশ্যই আমাদের শরীর চর্চার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে ।

 আমরা অনেকে মনে করে থাকে যে শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে শরীরচর্চা করতে হবে, বিষয়টি অনেকটাই ঠিকই তবে মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হলে অবশ্যই শরীর  চর্চার ও প্রয়োজন রয়েছে। 
আরো ও পড়ুন

পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হবে

যেকোনো কিছু থেকে মুক্তি পেতে ঘুমের কোন বিকল্প হয় না ।আপনি মানসিক অস্থিরতার কমাতেও ঘুম তাই  খুবই কাজে একটি উপায় হিসেবে  প্রতিয়মান হতে পারে। যখনই আপনি মানসিকভাবে অস্থিরতায় ভুগতে থাকেন তখন চেষ্টা করুন একটা ভালো ঘুম দিতে ।
 
একবার যদি আপনি এটা লম্বা ঘুম দিতে পারেন তাহলে দেখবেন অস্থিরতা আরো কমে গিয়েছে। 
আপনি যদি মানসিক ভাবে সুস্থ থাকতে চায় তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হবে। কারণ ঘুম হলো আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। 

পছন্দের জায়গায় বেড়াতে যাওয়া

সাধারণত আমাদের কিছু নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে যেগুলো অনেক বেশি পছন্দ হয়ে থাকে । যদি আপনি মানসিক সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে অবশ্যই সে সমাধান হিসেবে আপনি সেই জায়গাগুলোতে ঘুরে আসতে পারেন। 

মানসিক অস্থিরতা কমানোর আরো একটি সহজ ও সুন্দর উপায় হল নিজের ভালোলাগা কাজগুলো করা। হতে পারে সেটা গান শোনা বা প্রিয় মানুষের সাথে কথা বলা এক কথায় আপনার যা ভাল লাগবে তাই করুন আপনার ভালো লাগার কাজগুলো করতে থাকলে অস্থিরতা কমে যাবে। 

মেডিটেশন করতে হবে

মানসিক অস্থিরতা কমাতে আপনি মেডিটেশন করতে পারেন। আবার চাইলে ব্যায়াম করতেও পারেন। অনেক সময় শারীরিক দুর্বলতা থেকেও মানসিক অস্থিরতা হতে দেখা যায়। তাই আপনি খাবারের রুটিনের প্রতি খেয়াল রাখুন এতে পুষ্টিকর খাবার যোগ করুন ।
 
আমরা যদি আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো করতে চাই তাহলে অবশ্যই আমাদের মেডিটেশন করতে হবে । মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার অন্যতম প্রধান উপায় হলো এটি।
আরো পড়ুন 

অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার না করা

মানসিক অস্থিরতার প্রধান কারণ হলো অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করা । বর্তমান সময় মানসিক সমস্যার অন্যতম প্রধান কারণ হলো অতিরিক্ত মোবাইল ফোন এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করা। যদি সমস্যা সমাধান পেতে চায় তাহলে অতিরিক্ত ফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। 
ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও গান শোনা, গল্পের বই পড়া,কবিতা পড়া ,বাগানের সময় কাটানো ,এমন ধরনের নিজে ভালোলাগা কাজগুলো করুন । মনের অস্থিরতা কমাতে ফেলে আসা জীবনের কিছু ভালো স্মৃতি মনে করুন, অর্থাৎ আপনার সুসময় দিন নিয়ে ভাবুন দেখবেন মন মানসিকতা ভালো হয়ে গিয়েছে। 

শেষ কথা: মানসিক অস্থিরতা থেকে মুক্তি

মানসিক অস্থিরতা থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের উপরে শিরোনামে যা উপস্থাপনা করেছি তা সঠিকভাবে মেনে চলতে পারলে মানসিক অস্থিরতা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। 

আশা করি উপরের টিপস গুলো আপনার মানসিক অস্থিরতা কমিয়ে মুহূর্তগুলো আরো সুন্দর করতে সাহায্য করবে। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রুমু ২৪ নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url